pratilipi-logo প্রতিলিপি
বাংলা

প্রতিলিপির লেখকদের আকর্ষণীয় এবং অনুপ্রেরণাদায়ক অভিজ্ঞতার কাহিনী - পর্ব ৭

19 অগাস্ট 2023

নমস্কার,

প্রতিলিপিতে বহু লেখক অনেক বছর ধরে লেখালেখির সাথে যুক্ত আছেন। তাঁরা লেখার জন্য অনেক পরিশ্রম করে নিজেদের একটি পরিচিতি তৈরি করেছেন। আপনি কি জানেন এই লেখকদের প্রথম লেখা, লেখা থেকে উপার্জন, লেখার ধরন, লেখালেখি নিয়ে স্বপ্ন, ভবিষ্যৎ লেখকদের জন্য তাঁদের বার্তা ইত্যাদি সম্পর্কে কী ধরনের অভিজ্ঞতা থাকতে পারে? আসুন তবে আজ থেকে জেনে নেওয়া যাক! আগামী কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রতিলিপির লেখকদের কাছ থেকে পাওয়া বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় এবং অনুপ্রেরণাদায়ক অভিজ্ঞতা আমরা আপনার সাথে শেয়ার করব!


"... গোল্ডেন ব্যাচ পাওয়ার পর প্ৰথম লিখতে আরম্ভ করেছিলাম Lady lion-এর সিকুয়াল, প্ৰেমবর্ষণ আর শুভ পরিণয়। লেডি লায়ন আর প্ৰেমবর্ষণ খাতা থেকে টাইপ করে লিখে প্ৰতিলিপিতে আপলোড করেছিলাম... ওগুলো ইলেভেন, টুয়েলভেই লেখা। শুভ পরিণয় সম্পূর্ণ ব্ৰেন থেকে ফোনের কীবোর্ডে এসে পড়েছে... আমি স্বপ্নেও কল্পনা করিনি এতো জটিল একটা গল্প আমি লিখে শেষ করতে পারবো। শুভ পরিণয় লিখতে লিখতে মাঝে অনেক ছোটোবড়ো গল্প, অনুগল্প, কবিতা লিখেছি.. তাতেও অনেক ভালোবাসা পেয়েছি পাঠকদের। শুভ পরিণয় গল্পটা লেখার পরেই আমার ইনবক্স, রিভিউ সেকশনে অগন্তি মানুষের ভালোবাসা ঝরে পরলো। আমার জীবনে সৃষ্ট সবথেকে শক্তিশালী দুটো চরিত্ৰ অভ্ৰজিৎ আর মাহেশ্বরী... পাঠকরা ভরে ভরে ভালোবাসা দিয়েছেন তাই, এই জুটিকে নিয়েই লেখার সিদ্ধান্ত নিলাম। ক্ৰমে অহি জুটিকে নিয়ে শুভ পরিণয়ের পর 'বিয়ের ফাঁদে' (অসমাপ্ত), 'ভাগ্যচক্ৰে গাঁটছড়ার বাঁধনে', 'সম্পর্কের বাঁধনে', 'PARTNER', 'ভালোবাসা না ভালোফাঁসা' লিখেছি।

সাবস্ক্ৰিপশনে রেখে গল্প লিখতে লিখতে, পাঠকদের ভালোবাসা স্বরূপ স্টিকার পেয়ে ২০২২-এর এপ্ৰিল মাসে ৪৮১ টাকা প্ৰথম উপার্জন করেছিলাম। যেদিন আমি এই টাকার অ্যামাউন্ট আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে যুক্ত হতে দেখেছিলাম... সেদিন আমার খুশির ঠিকানাই ছিলো না। যারা যারা আমায় বলেছিলো, 'তোর লেখা কেউ পড়বে না', 'যাদের কাজ নেই, তারা পড়ে তোর লেখা', 'তোর দ্বারা হবে না'... তাদের মুখ একটু হলেও বন্ধ করতে পেরেছি। অবিশ্বাস্য একটা ঘটনা ঘটে গেলো জীবনে, বাড়িয়ে দিয়েছে মনের জোর হাজারগুণ আর লড়াই করার শক্তি।..."

আরও পড়ুন - তিন্নীর কলমযাত্ৰা (কলমে- সাসপেন্স কুইন 'তিন্নী')


 "... নতুন লেখকদের টিপস দেওয়ার মতো যোগ্যতা আমার এখনো হয়নি  , তারা অনেক ভালো লিখছে আর আগেও লিখবে আমি জানি । শুধু  নিজের এক্সপেরিয়েন্স থেকে কয়েকটা কথা বলতে পারি , যেমন ----

১) প্রতিলিপির সমস্ত ওয়েবিনার  এবং ফেলোশিপ এর ক্লাস ম্যাটেরিয়ালস গুলো ফলো করতে পারেন । ওখান থেকে অনেক কিছুই শেখার রয়েছে ।
২)ড্রাফট লিখে সেটা পাবলিশ করার আগে  , রিডিং পড়ার মতো  করে দুবার পড়ে নিতে পারেন , এতে বানান ভুলের সম্ভবনা থাকবে না ।
৩) আপনি নিজের পছন্দ মতো যে কোনো বিষয় বেছে নিতে পারেন । শুধু চেষ্টা করবেন  অন্তত পক্ষে ষাট পর্বের গল্প লেখার , আর সেই সাথে প্রতিটা পর্বের শব্দ সংখ্যা যেনো  হাজার থেকে বারোশোর মধ্যে হয় । দরকার হলে সময় নিয়ে ভেবে চিন্তে লিখুন কোনো তাড়াহুড়ো করার দরকার নেই । একটু আধটু ভুল তো সবাই করে  থাকে ,মানুষ মাত্রই ভুল হয় , সেটা কোনো বড়ো ব্যাপার না । মনে রাখবেন সুদীর্ঘ উপন্যাসই পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ।। আমাদের সুবিধার কথা ভেবেই  প্রতিলিপি একটা নতুন পরিবর্তন এনেছে ,  যেখানে আপনাকে নিজের গল্প প্রিমিয়ামে যাওয়ার  অবধি অপেক্ষা করতে হবে না ।পনেরো পর্ব অতিক্রম করার পর আপনি নিজেই প্রিমিয়াম সাবস্ক্রিপশনের জন্য অ্যাপ্লাই করতে পারবেন ,  এক্ষেত্রে আপনার পাঠক সংখ্যা আর  উপার্জন দুটোই  বৃদ্ধি পাবে । তাছাড়া পাঠকদের আর আগের মতো চার দিন অপেক্ষা করতে হবে না  , প্রতিদিনই একটি করে পর্ব আনলক হবে ।
৪)  পাঠকদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করবেন ।
৫) নিজের শরীর মন বুঝে,  একদিনে যতটা পারবেন ততটাই লিখবেন ।..."

আরও পড়ুন - গল্প হলেও সত্যি (চন্দনা বাড়ৈ) 


 "... যে প্ল্যাটফর্ম কখনও বিনা কারনে গল্প রিজেক্ট করেনা সেই প্ল্যাটফর্মের নাম আমাদের সকলের প্রিয় প্রতিলিপি!!!


তারিখটা আমার চিরদিন মনে থাকবে । আমি তখন গল্প লেখার জন্য নানা ইউ টিউব ভিডিও গুগুল ঘাঁটছি।  এমন সময়ে আমার এক বান্ধবী বললো -" তুমি প্রতিলিপিতে কেন লিখছো না ? ওখানে প্রচুর লেখক দারুণ দারুণ সব গল্প লেখে ! ওখানে একবার ট্রাই করো ।"

বান্ধবীর কথাটা শুনে সেদিনই প্রথম আমি প্রতিলিপি অ্যাপটা মোবাইলে ইনস্টল করে ফেললাম। 
আর করেই আমি অবাক !!!
প্রচুর গল্প ,কবিতা !! অনেক লেখক রোজ কিছু না কিছু লিখেই চলেছে এখানে ,,,
আমি প্রথমে ভয় পেয়ে গেলাম । এখানে কি করে জনপ্রিয় হবো বা কি করেই বা টাকা আসবে ??
আমি প্রতিলিপির পুরো বিষয়টা জানার জন্য সহায়তা বিভাগ, সম্পাদকীয় বিভাগ, অনলাইন প্রতিযোগিতা বিভাগ সব খুঁটিয়ে পড়ে বিষয়টা বোঝার চেষ্টা করলাম।

বিষয়টা বুঝতে আমার বেশী দেরী হলো না । প্রতিলিপি কি ? কেমন করে এখানে গল্প প্রকাশ করতে হয় আর কেমন ভাবেই বা অর্থ উপার্জন করা যায় - সবকিছুই পরিষ্কার লেখা আছে অ্যাপের মধ্যে,,

আমার সবচেয়ে ভালো লাগল প্রতিলিপির পরিষ্কার সব কিছু তুলে ধরা টাকে ,


প্রতিলিপি কখনোই এসব বলেনি যে, আপনি এতো সংখ্যক শব্দ লিখুন আর পেয়ে যান এতো সংখ্যক টাকা - এধরনের ফেক প্রতিশ্রুতি এখানে দেওয়া নেই।
এখানে বিভিন্ন অনলাইন প্রতিযোগিতা চলে সেখানে গল্প লিখে অংশগ্রহণ করলে পরে বিচারক গল্প পড়ে বিচার করে তারপর পুরষ্কার দেওয়া হয় ।..."

আরও পড়ুন - আমার কথা (শমীক স্যানাল) 


 "... প্রতিলিপি থেকে আমি প্রথম উপার্জন লাভ করি নরকসূত্র লেখার সময়ে, আড়াইশো টাকা। বড্ড আনন্দ পেয়েছিলাম সেদিন। প্রতিলিপি থেকে পাওয়া প্রথম উপার্জন তো বটেই, লেখা শুরু করার পরে আমার প্রথম উপার্জন ছিলো ওটিই। একটা জার্নাল কিনেছিলাম টাকাটা দিয়ে, যা আজও রয়ে গেছে আমার কাছে৷ তারপর বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে আয় করলেও এটা বরাবর আমার কাছে স্পেশাল রইবে৷


এখন অবশ্য একটু বেড়েছে উপার্জন। সুপারফ্যান সাবস্ক্রিপশন, প্রতিলিপি প্রিমিয়াম, স্টিকার ইত্যাদির মাধ্যমে মাসে পাঁচশো থেকে হাজার তো উঠেই যায়, কখনো আরেকটু বেশি। আসলে আমার পাঠক পাঠিকারা বেশিরভাগই ছাত্র ছাত্রী, তাই তাঁরা স্টিকার দিতে পারেন না বললেই চলে, সুপারফ্যানও এইজন্যই খুব কম আমার। বাচ্চা পোলাপাইনকে জোর করতে পারি না আমি, সবাই খুশি হলে যে আনন্দ পাওয়া যায়, কোনো অর্থ দিয়েই তাকে মাপা সম্ভব হয় না।

হ্যাঁ, লেখালিখির মাধ্যমে উপার্জন করা যায়, এটা প্রতিলিপি থেকেই আমার শেখা। অন্যান্য ক্ষেত্রেও এটি প্রয়োগ করে সাফল্যলাভ করেছি আমি। বিনা শ্রমে কাজ দেবো না, এটি বললে আজও বাংলা সাহিত্যক্ষেত্রে লেখক লেখিকাকে বাঁকা নজরের মুখোমুখি হতে হয়। প্রতিলিপি সেখানে এই উদ্যোগ নিয়ে প্রমাণ করেছে যে, শ্রম যাই হোক তা পারিশ্রমিক দাবী করে। এতে লজ্জা পাওয়ার কিচ্ছু নেই।

বর্তমান উপার্জন সম্পর্কে আগেই বলেছি, তাই এই নিয়ে আর বিশদে কিছু বললাম না। হ্যাঁ, এই উপার্জন আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ কারণ প্রতিটি উপন্যাস লিখতে অনেক পরিশ্রম করতে হয় একজন লেখককে। এমনও দিন গিয়েছে আমার যখন হাসপাতালের বেডে শুয়ে হাতে স্যালাইন নিয়ে আমি গল্পের পর্ব লিখেছি কারণ একদিন দেরী হলে পাঠকের উদ্বিগ্ন বার্তায় ইনবক্স ভরে যায় আমার। তাই যখন অল্প হলেও পারিশ্রমিক পাই, নিজের কাজ ও কষ্টকে সার্থক মনে হয়।..."

আরও পড়ুন - এক কলমচির গল্প (রিয়া ভট্টাচার্য)  


 "... প্রতিলিপি আমার কাছে একটি নতুন স্বপ্নের জগৎ। লেখালেখি নিয়ে ভবিষ্যত গড়ার স্বপ্ন! আমার এখনও মনে আছে, প্রতিলিপি থেকেও যে উপার্জন আসে, সেটি যেদিন আমি প্রোফাইলে দেখেছিলাম সেদিন কি পরিমাণ খুশি হয়েছি বলে বোঝাতে পারবো না। দেখাচ্ছিল 7 টাকা। সেই 7 টাকাই যেন আমার কাছে অনেক কোটি মনে হচ্ছিল। কারণ সেটি আমার প্রতিভার প্রাপ্তি। পুরষ্কার। প্রথম যেদিন 2022 সালে ব্যাঙ্কে টাকা পেলাম 180 টাকা! সেই টাকাটা আমার জমানো টাকার থেকে যেন বেশি দেখাতে লাগলো। প্রতিলিপি থেকে আমি জানতে পারি লেখা থেকেও উপার্জন হয়। গতবছর থেকে এই বছর ফেব্রুয়ারি পযর্ন্ত আমি লেখালেখি করে যথেষ্ট পারিশ্রমিক পেয়েছি। তবে মার্চ থেকে বর্তমানে ভাটা পড়েছে, উপার্জন কমেছে। তাই বলে লেখার ইচ্ছে কমেনি। পাঠকের ভালোবাসার স্টিকার, সাবস্ক্রিপশন, প্রিমিয়াম, সুপারফ্যানস আমাকে ভবিষ্যতে সব দিক থেকে সাহায্য করবে! আশা রাখি।


যারা নতুন গল্প লেখা শুরু করেছেন প্রতিলিপিতে। তাদের একটাই কথা; এগিয়ে যান, একদিনে হবে না। এক সময় ঠিক হবে। লেখা অন্তর থেকে আসে। কল্পনা থেকে আসে। আপনার লেখা বোঝাবে আপনার কল্পনার জগত কতটা বিস্তর, কতটা ভয়ঙ্কর, কতটা সুন্দর। লেখালেখি জীবনে সাফল্য চট করে সবাই পায় না। আমি 2021 থেকে প্রতিলিপিতে আছি। 2022 সালের মাঝামাঝি সময় থেকে পরিচিতি পেয়েছি। তাই নতুন লেখক যারা পড়ছেন তাদের বলছি, হতাশ হবেন না। আপনার কলম চলতে থাকলে, আপনি একদিন ঠিক নিজের লক্ষ্য পৌছাতে পারবেন।..." 

আরও পড়ুন - আমার কলমের পথচলা (রুহি মণ্ডল)


আমাদের লেখক পরিবারের কয়েকজনের কথা আপনার কাছে তুলে ধরলাম। ভবিষ্যতে আরও কাহিনী যুক্ত হবে। সঙ্গে থাকবেন

টিম প্রতিলিপি