অবশেষে বাধ্য হয়ে দেখা করতেই হল। ছেলেটি জেদ ধরে ছিল না আসলে অনশনে বসবে যে। ভোরের আলো ফোটার আগে যখন বাড়ির সবাই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, রাস্তার পুলিশ পাহাড়াও বেশ শিথিল তখন দেখা হল দুজনের গলির শেষ মাথায়। মেয়েটির সমস্ত শরীর ঢাকা কাপড়ে,মুখে মাস্ক,হাতে গ্লাভস শুধু চোখ দুটোই খোলা। অন্য দিকে ছেলেটি শুধু একটা হালকা টি-শার্ট আর জগিং সুট এ। আজ প্রায় এক মাস পর দুজনের দেখা।ছেলেটি কাছে আসার জন্য এগোতেই মেয়েটি ছিটকে সরে গেল আরও তিন হাত দুরে।
মেয়েটির শরীরে মারন রোগ বাসা বেধেছে যে।মাত্র এক সপ্তাহ আগেই ধরা পরেছে, টেস্ট এ পজিটিভ এসেছে।এখন তারা সবাই গৃহবন্দি। আর সেই থেকেই ছেলেটি জেদ ধরেছে দেখা করার।চোখের জল আর ভালবাসা কোনও বাঁধ মানে না। দুজনের অবস্থা সমান বেহাল। এক পা এক পা করে ছেলেটি এগিয়ে চলল আর মেয়েটি পিছিয়ে যেতে লাগল। এক পা,দু পা,তিন পা, মেয়েটি ছুটে পালানোর চেষ্টা করল। কিন্তু পারল না ছেলেটির সাথে। একে তো অসুস্থ শরীর তার উপর দুচোখে জলের ধারা বয়ে চলেছে, ফলে সামনে সবই অন্ধকার লেগেছিল।
ছেলেটি সহজেই ধরে ফেলল তাকে, জড়িয়ে ধরে নিজের বুকে টেনে নিল নিজের ভালবাসা কে। এবার আর পালাবার কোন পথই রইল না। মুখের মাস্ক খুলে দিয়ে এতদিনের না দেখা মানুষটাকে দুচোখ ভোরে দেখতে থাকল সে। তারপর আর কি? দুজোড়া ঠোঁট আবারও মিলিত হল আজ আগের মত করেই। না রইল কোনো ভয় আর না থাকল কোনও আশংকা। পুবের আকাশে রং ধরতে শুরু করল, ছেলেটির হাত ধরেই মেয়েটি বাড়ি ফিরল। তবে এবার আর মুখ ঢাকল না সে। আর কিছু সময় পরেই আজ সে হাসপাতালে ভর্তি হবে। যাবার সময় ছেলেটি বলল, "যদি বেঁচে থাকি তবে তোর সাথেই থাকব আর যদি মরেও যাই তোর সাথেই যাবো"। উত্তরে মেয়েটি বলল, "আমি অপেক্ষা করব"। সকাল হল, একজন চলল হাসপাতালে এম্বুলেন্স এ করে, আর একজন অপেক্ষায় থাকল কবে তার ডাক আসবে...।
রিপোর্টের বিষয়
রিপোর্টের বিষয়
রিপোর্টের বিষয়